হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যু।



ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। 

প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও হেলিকপ্টারে থাকা অন্য সকল যাত্রী দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে,’’ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় এব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানী দল। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, সেখানে প্রাণের কোন চিহ্ন নেই।
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।

ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট অসুস্থতা, মৃত্যু, অভিশংসন বা সংসদ কর্তৃক অপসারণের ফলে দায়িত্ব পালন করতে অপারগ হলে করণীয় কী, সেই সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির সংবিধানে।

এতে বলা হয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে মোহাম্মদ মোখবার) রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

একই সাথে সংসদ এবং বিচার বিভাগের প্রধানদের সাথে যৌথভাবে পরবর্তী সর্বােচ্চ ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করবেন তিনি।

এই সব কিছুই হতে হবে সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদন সাপেক্ষে। কারণ, ইরানের যেকোনো বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

রোববার আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি।এরপর হেলিকপ্টারে ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়ান ছাড়াও আরো ছিলেন ধর্মীয় নেতার (খামেনি) প্রতিনিধি ও তাবরিজের ইমাম সৈয়েদ মোহাম্মদ আল হাশেম, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালিক রাহমাতি, পূপ্রেসিডেন্ট প্রোটেকশন ইউনিটের কমান্ডার সরদার সৈয়েদ মেহদি মৌসভি, কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী এবং ক্রুরা।

তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি। কিন্তু ভারী কুয়াশা থাকায় অনুসন্ধান অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রেসিডেন্টের বহরে মোট তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করে।

পূর্ব আজারবাইজানের ডেপুটি গভর্নর ফর ডেভেলপমেন্ট আলি জাকারি স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান “ওই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল এবং অন্য দুটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছে। একটি বিধ্বস্ত হয়েছে।"

নিরাপদে ফেরা হেলিকপ্টারে জ্বালানি মন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ান এবং আবাসন ও পরিবহনমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ ছিলেন।

ইরানের আধা সরকারি তাসনিম নিউজ এজেন্সি বলছে, হেলিকপ্টারের ভেতরে প্রেসিডেন্টের সাথে থাকা লোকজন জরুরি কল করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্থানীয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন, হেলিকপ্টারের সাথে রেডিও যোগাযোগ করা হয়েছিল, তবে তিনি এর বাইরে আর কোনও ব্যাখ্যা দেননি।

দুর্ঘটনার বিষয়ে সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার জানিয়েছেন, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে তার কথা হয়েছে।

"এখনো পর্যন্ত কোনো সন্দেহ করার মত কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।"

কিন্তু, তিনি "পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন।"

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইরানের রাষ্ট্রপতি এব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন।

সোমবার এক্সে পোস্টে মি. মোদি লিখেছেন, "তার পরিবার ও ইরানের জনগণের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। এই শোকের সময়ে ভারত ইরানের পাশে আছে।"

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া সুদানিও এক শোকবার্তায় এব্রাহিম রাইসি'র মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, রাইসি'র মৃত্যুতে "অনেক বড় ক্ষতি" হলো।

পাকিস্তানে একদিনের শোক ঘোষণার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্স জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বলেছেন, এই সময়ে ইরানের পাশে আছে তার দেশ।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো রাইসির প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি ছিলেন একজন অকৃত্রিম বন্ধু এবং অসাধারণ নেতা।

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।

"ভ্রাতৃপ্রতীম দেশটির জন্য দুঃখের এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত।"


রেস্ট ইন পিস, স্যার!!

আপনার এই মৃ'ত্যু আমরা মনে রাখবো। কা'পু'রুষের এই পৃথিবীতে আপনার এই মহান মৃ'ত্যু অমর হয়ে থাকবে। 

এই নির্মম সময়ের ইতিহাস পৃথিবীতে একদিন লেখা হবে। 
আপনি ল'ড়া'ই করে বীরের মতো মৃ'ত্যু বরণ করে নিয়েছেন।

আল্লাহ তা'য়ালা আপনাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন-আমিন।🤲



Post a Comment

0 Comments